প্রকাশিত: ৩:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২, ২০২৩
সোহেল মিয়া,দোয়ারাবাজার: আামরা যা খাই তার অধিকাংশই বিষযুক্ত। কারণ কীটনাশক ব্যবহারের পর সবজি সংগ্রহের যে সময় বেধে দেওয়া আছে তা কৃষক মেনে চলেন না। আবার অজ্ঞতার কারণে ভুল বা নিষিদ্ধ কীটনাশক ও কৃষকরা ব্যবহার করে থাকে। কাজেই এভাবে আমরা অধিক পরিমাণে বিষযুক্ত সবজি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে নতুন নতুন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। জমিকে কীটপতঙ্গ আক্রমণ থেকে বাঁচাতে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে কীটনাশক ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। এমনি বলছিলেন আর নিজের চাষকৃত সবজির জমি দেখাচ্ছিলেন দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম।
পাতার আড়ালে মাচায় ঝুলে আছে কচি লাউ। নিজেই তা কাঁচি নিয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়লেন তিনি। একটার পর একটা লাউ কাটছেন আর রাখছেন ঝুড়িতে। কেবল লাউ-ই নয়, শিম, বেগুন,বাঁধা কপি,লাল শাক,টমেটো,মিষ্টি লাউ কিংবা কড়লা নিজেই কেটে অবসর সময়ের ব্যস্তদিন পার করছেন চেয়ারম্যান রফিকুল।
তিন একর ফসলি জমিতে লাউ, মিষ্ঠি
লাও,করলা,শষা,শিম,বাঁধাকপি,স্কোয়াশ, পটল,লাল আলু,সাদা গোল আলু,টমেটো,কালা বেগুন, দনিয়া পাতা, মুলা
তরমুজসহ হরেকরকমের সবজি চাষ করছেন তিনি।
দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তিনি -তার মেধা, যোগ্যতা আর আন্তরিকতাই মানুষকে আত্মকর্মশীল হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন,তিনি একাধারে যেমন জনপ্রতিনিধি, তেমনি একজন সফল কৃষক ও সফল খামারি। তার উদ্যোগ দেখে এলাকার মানুষ এখন সবজি চাষ ও খামারিতে সাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এতে এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন এই চেয়ারম্যান। শ্রমিকের চেয়ে বেশি সময় নিজেই মাঠে কোমর বেঁধে সময় দিচ্ছেন,পরিচর্চা করছেন ভালো ফসল ফলানোর লক্ষ্যে।
রফিকুল ইসলাম দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ও নরসিংপুর গ্রামের সুপরিচিত, সুনামধন্য পরিবারের সন্তান। তার দাদা হাজ্বী আব্দুস সাত্তার ছিলেন তৎকালীন দোয়ারাবাজার,বাংলাবাজার ও নরসিংপুর ইউনিয়নের নেতৃত্বদানকারী জনপ্রতিনিধি,বাবা বদরুল আলম ছিলেন একজন সুপরিচিত সমাজ সেবক। চাচা সামছুল আলম ছিলেন একজন সালিশ ব্যাক্তিত্ব ও ইউপি সদস্য,চাচা আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম সুনামধন্য চিকিৎসা কেন্দ্র জাবা মেডিকেল সেন্টার ছাতকের স্বত্বাধিকারী, ফজলুর রহমান সাবেক চার বারের সফল ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান,চাচি সালেহা বেগম মিনা দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। বড় ভাই অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সিলেট জেলা বারের সু-দক্ষ আইনজীবী।
ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম অত্যন্ত সততা ও সুনামের সাথে দোয়ারাবাজার উপজেলার মানুষের কল্যানে কাজ করছেন । কুড়াচ্ছেন অগনিত সুনাম ও সুখ্যাতি। তবে জনসেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া সময়টুকু থেকে কিছুটা অবশর সময় বের করে মনোনিবেশ করেছেন কৃষি ক্ষেত্রে।
কৃষি কাজ করেই তিনি বেশ সফল। তিনি একের পর এক ফসল আবাদ করে যাচ্ছেন। এতে রয়েছে তার ব্যাপক সফলতা। তিনি একজন সফল কৃষক ও সফল খামারি। এমনটাই দাবি তার পরিবারের সদস্যরা।
ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, নিজের চাষ করা মিষ্টি লাউ, বাঁধাকপি ও লাল শাক তুলে অসম্ভব আনন্দ লাগছে। নিজের হাতে বুনানো সবজি চাষ করে সেই সবজি তুলে নিজ ও পরিবার পরিজনের চাহিদা মিটাতে সক্ষম হচ্ছি বিশ্বাসই করতে পারছি না। কারণ,জনপ্রতিনিধি হওয়ায় মানুষের কল্যাণে সেবার কাজে ব্যাস্ত থাকায় সব সময়ে কিনে থাকি। তাই নিজে বুনা শাক সবজি তুলে রান্না করে খাওয়াটার তৃপ্তিই আলাদা। আমি মনে করি সবাই যদি কম-বেশি ফাঁকা জায়গায় শাখ-সবজি নিজে পরিশ্রম করে নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারে, তাহলে দেশকে উন্নয়নের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের আরও বলেন, শহরে কিংবা গ্রামে যারা থাকেন তাদের মধ্যে অনেকেরও ফাঁকা জায়গায় পতিত থাকে। সবাই যদি ফাঁকা জায়গায় সবজি চাষ করে নিজের খাদ্য নিজরাই উৎপাদন করতে পারে তাহলে তাদের সবজির চাহিদা মেটাতে পারবে বলে মনে করি। তাছাড়া, পাশবর্তী এলাকা বাংলাবাজার, বাংলাবাজার এলাকার মানুষ কৃষি কাজ করে আজ স্বাবলম্বী।সবজি চাষ করে তারা তাদের নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে,আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। সবজি চাষের মাধ্যমে তারা এলাকার সুনাম কুড়িয়েছেন। বাংলাবাজার এলাকার সবজি দিয়ে সিলেট বিভাগের মানুষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি হচ্ছে। ওই এলাকাকে একনামে সবজির ভান্ডার হিসেবে সবাই চিনে।
তিনি আরও বলেন,অনেকে সবজি চাষের সঠিক নিয়ম না জানায়, সবজি চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। এতে যেমন জমি পতিত থেকে যাচ্ছে তেমনি চাহিদা মেটানোর কষ্টের পাশাপাশি, নিজেদের কর্মসংস্থান হারাচ্ছে।
সবাই যদি জমি পতিত না রেখে যার যার অবস্থান থেকে সঠিক পরিচর্চার মাধ্যমে সবজি চাষে এগিয়ে আসেন তাহলে দোয়ারাবাজার উপজেলার সবকয়টি এলাকা বাংলাবাজারের মতো সবজির ভান্ডারে পরিনত হবে। এতে নিজেদের কর্মসংস্থান বাড়বে, চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি নিজ ও দেশের আর্থিক সচ্ছলতায় অবদান রাখবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক – জাকিয়া সুলতানা
ঠিকানা – সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল পয়েন্ট, সুরভী ১২/২ হাছন নগর সুনামগঞ্জ।
মোবাইল নাম্বার ০১৩১০৮৬৮৩১৩
email- noorerfouara94@gmail.com
Design and developed by Web Nest