ছাতকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশিত: ৪:৫১ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০২৩

ছাতকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ

 

ছাতক প্রতিনিধি

ছাতকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী সহ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ। চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত এ প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে অনিয়মিত সহ নানান অভিযোগ তোলা হয়।

প্রধান শিক্ষিকাকে অন্যত্র বদলী করানোর জন্য দীর্ঘদিন
ধরে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় বর্তমানে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সহ এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নে ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত আন্ধারীগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারীকরন হয় ২০১৩ সালে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকায় শিক্ষার একটি সুষ্ট পরিবেশ বইতে থাকে। ২০১৮ সালে চলিত দায়িত্ব পেয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে শাহেদা বেগম এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি প্রায়ই কারনে-অকারনে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন।
প্রধান শিক্ষিকার অনুপস্থিতির কারনে বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষার মান ক্রমেই নিম্নমুখী হতে থাকে। স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের কারনে বিদ্যালয়ের সকল নিয়মাবর্তিতায় ভাটা পড়ে। কোন ছুটি ছাড়াই তিনি টানা ৪৫ দিন পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অুুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে নিয়েছেন। প্রায় সময়ই তিনি বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন না। শ্রেণী কক্ষের জানালা বন্ধ রেখেই পাঠদান পরিচালনা করেন। বিগত কয়েক মাস ধরে বিদ্যুৎ ও পানিবিহিন অবস্থায় চলছে বিদ্যালয়ের কাজকর্ম। এতে শিক্ষার্থীদের অনাকাংখিত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ও ওয়াই-ফাই সংযোগ তিনি নিজ বাড়িতে নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কোন সভা তিনি আহবান করেননি। বিদ্যালয়ের কার্যক্রম একটি অব্যবস্থাপনা ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছেন তিনি। প্রধান শিক্ষিকার এমন আচরনে ক্ষোব্ধ হয়ে উঠেন স্থানীয় লোকজন। বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষিকা শাহেদা বেগমকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার বিষয়ে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে এক সভা অুনষ্ঠিত হয়।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান শিক্ষিকাকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের ৪ এপ্রিল বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সহ এলাকার শতাধিক ব্যক্তি স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) বরাবরে প্রদান করা হয়। একই বিষয়ে ৭ জুন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে
ও পৃথক অভিযোগ দেয়া হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ প্রধান শিক্ষিকা শাহেদা বেগমকে অন্যত্র সরানো না হলে একটি অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।