বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবীতে এনডিএফ”র প্রচারপত্র বিলি

প্রকাশিত: ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০২৩

বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবীতে এনডিএফ”র প্রচারপত্র বিলি

ভাটির কণ্ঠ ডেস্ক : বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবীতে মঙ্গলবার বেলা ১০ঘটিকার সময় হাওরাঞ্চলে বন্যা সমস্যা ও পুনর্বাসন বিষয়ক আন্দোলন পরিচালনা কমিটি- এনডিএফ”র উদ্যোগে রায়পাড়াস্থ সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালেলয় হতে প্রচারপত্র শহরের দোকানপাট,অফিষ আদালত পাঠগারসহ সর্বত্র বিলি করা হয় ।এসময় উপস্থিত ছিলেন,জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ও হাওরাঞ্চলের বন্যা সমস্যা ও পুনর্বাসন বিষয়ক আন্দোলন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রত্নাংকুর দাস জহর,সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম ছদরুল, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কামটির আহ্বায়ক সুখেন্দু তালুকদার মিন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক আমির উদ্দিন,ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু মন্ডল,বারকি শ্রমিক সংঘের আবুল বাশার প্রমূখ ।প্রচাপত্রে উল্লেখ করা হয় হাওরাঞ্চল প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এখানকার বোরো ফসল ও মাছ দেশের মোট খাদ্য সরবরাহের একটি বড় যোগানদার। ফলে হাওরের এই সম্পদ গ্রাস করার জন্য সাম্রারাজ্যবাদী লগ্নিপুঁজির সাথে দেশীয় আমলা-দালাল পুঁজিপতিরা হাওরকে তাদের শোষণ-লুটপাটের একটি মৃগয়াক্ষেত্রে পরিণত করেছে। তাছাড়া হাওরাঞ্চল দেশের উত্তর-পূবাঞ্চলের সীমানা ঘেঁষে অবস্থান করায় ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের প্রেক্ষিতে সাম্রারাজ্যবাদী শক্তিসমূহ ও তাদের তাবেদার নয়াঔপনিবেশিক আধা-সামন্তবাদী রাষ্ট্র ভারত বিভিন্নভাবে হাওরকে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরও বিগত কোন সরকারই বন্যা সমস্যা সমাধানে জাতীয় স্বার্থে বিজ্ঞান ভিত্তিক কোন পরিকল্পনা না নিয়ে পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো) ও বন্যা পরিকল্পনা সমন্বয়কারী সংস্থা (এফপিসিও) এর মাধ্যমে চীন ও ভারতের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। বৃহৎ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিতে পরিণত হতে যাওয়া পুঁজিবাদী চীন ও নয়া ঔপনিবেশিক আধা-সামন্তবাদী ভারত স্বীয় স্বার্থে পারস্পরিক বিরোধ থাকলেও বাংলাদেশের সাথে তাদের অভিন্ন নদীতে বাঁধ, গ্রোয়েন, ডেম নির্মাণ করে শুস্ক মৌসুমে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ও নাব্যতা সংকট সৃষ্টি করা এবং বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে দিয়ে অস্বাভাবিক বন্যা সৃষ্টির ক্ষেত্রে অভিন্ন ভ‚মিকা নিয়ে আসছে। ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে এসব তৎপরতার বিরুদ্ধে কোন ভ‚মিকা না নিয়ে বরং অতীতের স্বৈরতান্ত্রিক সরকারগুলোর মতই এসব প্রতিবেশি দেশের সাথে একের পর এক জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি করে চলছে। তাই হাওরাঞ্চলের বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে হাওর অঞ্চলের ব্যাপক জনগণকে আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রসর হওয়ার বিকল্প নেই। তাই আসুন আসন্ন বর্ষাকালকে সামনে রেখে বন্যার আগাম প্রস্তুতির লক্ষ্যে আওয়াজ তুলি-*পাহাড়ী ঢলে ফসল হানি রোধে এবং বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য জাতীয় স্বার্থে হাওরাঞ্চলের নদনদী ও খাল-বিল খননের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলুন।*অপরিকল্পিত হাওর রক্ষা বেড়ি বাঁধ নির্মাণ বন্ধ এবং হাওর রক্ষা বাঁধে ব্যাপক লুটপাট ও দূর্নীতি বন্ধে সোচ্চার হোন।*সুরমা নদী অমলসীদ থেকে ভৈরব পর্যন্ত এবং কুশিয়ারা নদী অমলসীদ থেকে কালনি পর্যন্ত খনন করতে হবে। এর সাথেঘোড়াউত্রা বাঁকসহ নদীর বড় বড় বাঁক কেটে সোজা করতে হবে।*যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই, চলতি, পাটলাই, সুমেশ্বরীসহ সকল পাহাড়ী উপনদীগুলো খনন করতে হবে।*পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল অপরিকল্পিত বেড়িবাঁধ অপসারণ ও হাওরাঞ্চলে পানি প্রবাহের প্রকৃতিকে অস্বীকার করে নির্মাণকৃত সকল অপরিকল্পিত রাস্তা ও স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে।এবংনদ-নদী, খাল, ছড়া দখল মুক্ত করতে হবে।*কৃষি খাতে সর্বোচ্চ ভর্তুকি দিতে হবে এবং কৃষি উৎপাদনে ব্যবহৃত সার, বীজ, ডিজেল, কীটনাশক ও বিদ্যুৎ বিনামূল্যে প্রদান করতে হবে। কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে ।*আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকদের ফসল কাটার জন্য সরকারি সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।*হাওরাঞ্চলের জন্য সররকারিভাবে পর্যাপ্ত বড় নৌকা এবং আশ্রয় কেন্দ্রের ব্যবস্থা করতে হবে।*বিনাসুদে কৃষি ঋণ প্রদান, কৃষি ঋণ আদায়ে সার্টিফিকেট মামলা প্রথা বাতিল করতে হবে।*কৃষি জমি নষ্ট করে নির্মিত অপরিকল্পিত সকল স্থাপনা উচ্ছেদ ও নতুন স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা বন্ধ করতে হবে।*হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামগুলিতে টেকসই গ্রামরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।*চাল, ডাল, তেল, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজণীয় দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে। স্বল্প মূল্যে জনগণের জন্য রেশনিং চালু করতে হবে।*হাওরের ক্ষেতমজুর, ভূমিহীন ও গরীব কৃষকদের জমি ও কাজ দিতে হবে। হাওরের খাসজমি প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে বন্টন করতে হবে।*বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফসল,মাছ,এবংবিধ্বস্ত ঘন বাড়ির ক্ষতিপূরণ দিতে হবে*বন্যা নিয়ন্ত্রনে গৃহিত প্রকল্পসমূহে গড়ে উঠা রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও প্রশাসনের লুটপাটকারী কর্মকর্তাদের অসাধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াও ।*হাওরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।এবংবন্যার সময় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ভাসমান হাসপাতালের ব্যবস্থা করতে হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ