দুই বাউল শিল্পীকে ‘গণধর্ষণ’ : আসামিকে ধর্ষিতার জুতোপেটা

প্রকাশিত: ৫:৪৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২

দুই বাউল শিল্পীকে ‘গণধর্ষণ’ : আসামিকে ধর্ষিতার জুতোপেটা

ভাটির কন্ঠ ডেস্ক :: সিলেটে প্রায় দুই মাস আগে দুই বাউল নারী শিল্পীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠে। এরপর দায়েরকৃত মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার হলেও অন্য আসামিরা ছিলেন অধরা। তবে এ ‘গণধর্ষণকাণ্ড’র সন্দেহভাজন একজনকে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) মহানগরের বন্দরবাজার থেকে আটক করে জালালাবাদ থানাপুলিশ। এসময় সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে গণধোলাই দেন ‘ধর্ষিতা’ হওয়া এক শিল্পী ও তার সঙ্গীরা।

ঘটনাটি মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বন্দরবাজার এলাকার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রবেশের রাস্তায় ঘটে। আনহার নামের আটক ওই ব্যক্তি জালাবাদা থানাধীন শিবেরবাজার এলাকার ইসলামপুর গ্রামের আলতার ছেলে।

গত ৮ ডিসেম্বর সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ করে সিলেটের এক নারী বাউল শিল্পীর মা অভিযোগ করেন- গানের অনুষ্ঠানের নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ধান ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে দুই নারী বাউল শিল্পীকে ‘গণধর্ষণ’ করা হয়। গত ২ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে সিলেট মহানগরের জালালবাদ থানাধীন শিবেরবাজার এলাকার বাছনা বিলের ধান ক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- সংবাদ সম্মেলনকারী নারীর (৫৫) বিবাহিত মেয়ে (১৯) ও অপর একজন কিশোরী (১৫) পেশাদার বাউল শিল্পী। গত ৩১ অক্টোবর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ইছাকলস গ্রামের মৃত শুকুর উদ্দিনের ছেলে মো. ফয়জুল হকের সঙ্গে ২ নভেম্বর কোম্পানীগঞ্জের পুটামারা গ্রামের ভানুদাসের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনের জন্য বাউল শিল্পী পাঠানোর মৌখিত চুক্তি হয় ওই নারীর। ফয়জুলের কথামতো ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই নারী তার শিল্পী মেয়ে ও মেয়ের স্বামী এবং কিশোরী বাউল শিল্পীকে নিয়ে জালালাবাদ থানাধীন তেমুখী পয়েন্ট থেকে একটি প্রাইভেট কারযোগে গানের অনুষ্ঠানে যাওয়ার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেন। এসময় প্রাইভেট কারের পাশাপাশি একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে অভিযুক্ত ফয়জুলের সঙ্গে তার ৭-৮ জন সঙ্গী ছিলেন।

পথিমধ্যে তারা শিল্পীদের গানের অনুষ্ঠানের দিকে না গিয়ে জালালাবাদ থানার শিবেরবাজার এলাকার বাছনা বিলের দিকে জোরপূর্বক নিয়ে যেতে থাকেন। শিল্পীরা এসময় পথ বদলের বিষয়টি জানতে চাইলে ভয় দেখানো হয় এবং অটোরিকশার যাত্রীরা নেমে অস্ত্রের মুখে শিল্পীদের টেনে-হেঁচড়ে নামিয়ে বাছনা বিলের ধান ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে দুই নারী শিল্পীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ফয়জুল ও তার সহযোগিরা। এসময় বিবাহিত নারী শিল্পীর স্বামী কৌশলে জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাইলে জালালাবাদ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ধর্ষিতাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে, এ ঘটনায় ওই রাতেই দুই আসামিকে গ্রেফতার করে জালালাবাদ থানাপুলিশ।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান এ বিষয়ে বলেন- ঘটনার রাতেই আমরা দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছিলাম। আজ (মঙ্গলবার) মামলা আইও ব্ন্দরবাজার থেকে সন্দেহভাজন একজনকে ধরেছেন। তবে ওই রাতে এই যুবক ছিলেন কি না তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ