স্কুলে নারী শিক্ষককে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ

প্রকাশিত: ২:৪৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০২২

স্কুলে নারী শিক্ষককে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ

নওগাঁর ধামইরহাটের খড়মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রজেক্টর না দেওয়ায় এক নারী শিক্ষিকাকে বেধড়ক মারপিট করেছে ওই গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামে এক যুবক।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে ওই নারী শিক্ষককে মারপিট করার পর বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ও গ্লাস ভাংচুর করা হয়। স্থানীয়রা ওই শিক্ষিকাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

এদিকে প্রধান শিক্ষক ও ওই নারী শিক্ষক বাদী হয়ে থানায় দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ধামইরহাট থানায় লিখিত দুটি অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খড়মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খেলুন সরদারের কাছে গত বুধবার দুপুরে বিদ্যালয় চলাকালে খড়মপুর গ্রামের মৃত মোজাফ্ফর রহমানের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৪০) বিদ্যালয়ের প্রজেক্টর চায়। সরকারি সম্পদ প্রধান শিক্ষক দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।

পর দিন বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আনোয়ার হোসেন অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে খুঁজতে থাকে। প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে আনোয়ার হোসেন বিদ্যালয়ের চেয়ার, টেবিলের গ্লাসসহ বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র ভাংচুর করতে থাকে।

এ সময় সহকারী শিক্ষক মোসা. মারুফা ইয়াসমিন (৩৫) ও দপ্তরি কাম-নৈশপ্রহরী মো. ইবাদত হোসেন ভাংচুরের প্রতিবাদ এবং এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আনোয়ার হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন মিলে শিক্ষক মারুফা ইয়াসমিনকে মাটিতে ফেলে বিবস্ত্র করে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারপিট করে। একপর্যায়ে তারা ওই শিক্ষকের গলা দুই হাত দিতে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়।

এ সময় ওই শিক্ষকের চিৎকার শুনে বিদ্যালয়ের অপরাপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা।

অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন মারপিটের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে শিক্ষক মারুফা ইয়াসমিনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে মাত্র। কোনো মারপিটের ঘটনা ঘটেনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আজমল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আরিফুল ইসলামসহ আমি সহকারী শিক্ষক মারুফা ইয়াসমিনকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ঘটনাস্থলে একজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রয়েছেন। সুষ্ঠু বিচারের জন্য প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অন্যায়ভাবে শিক্ষককে মারপিট করার অপরাধে অবশ্যই দোষী ব্যক্তির শাস্তি দাবি করছি।

ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, থানায় অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ