এম এ মান্নান,মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর গ্রামের আবুল কালাম ও শাহিদা খাতুন দম্পতির একমাত্র কন্যা ফাহমিদা আক্তার লাভলী(২০)নিখোঁজ হওয়ার ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও তার কোনো খোঁজ মেলেনি। মেয়েটি সিলেটের শাহী ইদগাহ থেকে নিখোঁজ হয়েছে। পরিবারের কান্না থামেনি এখনো,দীর্ঘ অপেক্ষায় দিন গুনছেন স্বজনরা,কিন্তু এখনও অন্ধকারেই রয়ে গেছে লাভলীর সন্ধান।
পরিবার সূত্রে জানাযায়,প্রায় চার বছর আগে পড়াশোনা করানোর কথা বলে লাভলীকে সিলেটের শাহী ইদগাহ এলাকার সৈয়দপুর হাউজে থাকা পীর সৈয়দ মবনু'র কাছে নিয়ে যান।সেখানেই তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি গৃহস্থালির কাজ করাতেন।
লাভলীর মা শাহিদা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,“গত ৮ জুন পীর সাহেব আমাকে ফোনে জানালেন,আমার মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। খবরটি শোনার দুই দিন পর আমি সিলেটে যাই। সেখানে পৌঁছানোর পর পীর সাহেব নিজে একটি অভিযোগ লিখে আমাকে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি অভিযোগটির নিচে স্বাক্ষর করি,এবং পরে তিনি সেটি থানায় নিয়ে গিয়ে জমা দেন এবং পরে অভিযোগের একটি কপি নিয়ে বাসায় ফিরে আসেন।
আমি তখন আমার মেয়ের খোঁজে পীর সাহেবের বাড়িতে টানা আট দিন অবস্থান করি। কিন্তু কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে পীর সাহেব আমাকে আশ্বস্ত করে বলেন,‘একুশ দিনের মধ্যে তোমার মেয়ে ফিরে আসবে।’ সেই আশ্বাসে আমি বাড়ি ফিরে আসি। কিন্তু এখনো আমার মেয়ের কোনো খোঁজ পাইনি।”
তিনি আরও বলেন,“এরপর থেকে আমি বারবার ফোন করেছি, সিলেট গিয়েছি, কিন্তু মেয়ের কোনো খোঁজ পাইনি। ছয় মাস কেটে গেল,কেউ কোনো খোঁজ দিতে পারছে না লাভলী'র। আমার মেয়েটি বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে—তা জানতেও পারছি না। আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে দ্রুত লাভলীর সন্ধান এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা মো.কামাল হোসেন বলেন,বিষয়টি রহস্যজনক এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হলে হয়তো অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে পীর সৈয়দ মবনু বলেন,“আমার এইখানে আরও অনেক মেয়ে থাকে।এই মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক।একজনের সঙ্গে চলে যাওয়ার সময়, সিসিটিভি ফুটেজ আছে।সেখানে আমার করার কিছু নেই।” লাভলীর খোঁজে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বিরক্ত হয়ে সাংবাদিককে বলেন,“এই বিষয়ে আর কখনও ফোন করবেন না।”পরবর্তীতে একাধিক স্থানীয় সাংবাদিক যোগাযোগের চেষ্টা করলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরপরই ব্যস্ততা দেখিয়ে কল কেটে দেন।
লাভলী নিখোঁজের ছয় মাসেও সন্ধান না পাওয়ায়, তার পরিবার পরিজনদের কান্না আর আহাজারি করছেন। এবং প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছেন যে, নিখোঁজের রহস্য উদঘাটন করে, লাভলীর সন্ধান মিলানো। এদিকে নিখোঁজ লাভলীর সন্ধান নামিলায় এলাকায় চলছে ক্ষোভের মাতম।
এবিষয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জের সরকারি নম্বরে একাধিকবার কল করলেও ফোনটি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপদেষ্টা মন্ডলির সভাপতি : লন্ডন প্রবাসি বিশিষ্ট সমাজকর্মী কবি ইমদাদুন খান
সম্পাদক : জাকিয়া সুলতানা মনি
প্রধান বার্তা সম্পাদক : আবুল হোসেন