সেলিম আহম্মেদ, ধর্মপাশা
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় প্রকাশিত মিথ্যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকালে উপজেলা সদরে বিএনপি'র আহ্বায়কের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সালাহ উদ্দিন মাহতাব। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সালাহ উদ্দিন মাহতাব বলেন, আজ আমি গভীর দুঃখ ও ক্ষোভের সঙ্গে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি, একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ সম্পর্কে সত্যটি তুলে ধরার জন্য। গত ০৪ নভেম্বর 'শিক্ষকের কাছে ১৫ লক্ষ টাকা দাবি বিএনপি নেতার, এই শিরোনামে দৈনিক সমকাল প্রত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং ০৬ নভেম্বর অগ্রযাত্রা প্রতিদিন ক্রাইম, ফেসবুক পেইজে ধর্মপাশায় ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন দামাচাপা দিতে সভাপতি মাহতাবের ঘুষ বাণিজ্য, এমন শিরোনামে আমার বিরুদ্ধে আরেকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। উক্ত সংবাদে কোনো প্রকার সত্যতা নেই। এটি মনগড়া, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর একটি প্রতিবেদন, যার মাধ্যমে আমাকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। অগ্রযাত্রা প্রতিদিন ক্রাইমের সংবাদে প্রকাশিত তথ্যে আমার ও শিক্ষকের বাবার কোন বক্তব্য নেয়নি এমনকি আমাকে বিদ্যালয়ের সভাপতি সম্মোদন করা হয়েছে। আমি মূলত বিদ্যালয়ের সভাপতি নই। যা সাংবাদিকতার মৌলিক নীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন। কেবল মাত্র অডিও ক্লিপের উপর ভিত্তি করে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ রুপে বিকৃত ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত শিক্ষকের বাবা মুসলিম উদ্দিন নিজেই আমাকে ঘিরে ১৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন, এবং তার অস্বীকারোক্তি সম্বলিত অডিও ক্লিপ ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এই সংবাদ প্রকাশের পেছনে রয়েছে একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। কারণ, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপি'র দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে আমি বিপুল ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হই। ঐ নির্বাচনে পরাজিত কিছু ব্যক্তি আমার জনপ্রিয়তা ও সংগঠনভিত্তিক অবস্থান নষ্ট করতে বিভিন্ন সময় অপপ্রচার, মিথ্যা তথ্য ও ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, গত ২৯ অক্টোবর দুপুরে রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাউসার ও এক ছাত্রী অভিভাবকের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। আমার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক সাদেক মিয়া, সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি'র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহাম্মদ, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাফিজুর রহমান, স্থানীয় প্রবীণ আয়েদ মিয়া, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য বাবর আজমসহ প্রায় ২০–২৫ জন লোক। ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমরা উভয় পক্ষকে শিক্ষকদের রুমে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। প্রায় ৩২ মিনিটের ভিডিও রেকর্ডে দেখা যায়, ২৬ অক্টোবর বিকেলে প্রাইভেট পড়ানোর সময় প্রধান শিক্ষক একজন ছাত্রীর সাথে অনৈতিক আচরণ করেন। বিষয়টি জেনে সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে অবহিত করি। তিনি আমাকে পরামর্শ দেন আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে এবং নিজ হাতে আইন না নেওয়ার জন্য। তিনির পরামর্শ অনুযায়ী আমি ছাত্রীর অভিভাবকদের আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিই এবং ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। এর পরই একটি চক্র আমার সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে ভুয়া ফেসবুক পেইজ এবং অপসাংবাদিকদের মাধ্যমে অপপ্রচার শুরু করে। আমি এই মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে, আমি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ করছি এই মিথ্যা সংবাদ প্রচারে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। এসময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির ৩য় যুগ্ন আহ্বায়ক মো. নুরুল ইসলাম বি.এস.সি, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুল আলম হাদিস, বিএনপি'র নেতা রফিকুল ইসলাম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহ্বায়ক শাহিন খান, উপজেলা কৃষক দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বাবলু মিয়া, সুনামগঞ্জ জেলা তারেক জিয়া ঐক্য ফ্রন্টের যুগ্ন আহ্বায়ক মিলন মাহাতাব, সুখাইর রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপি'র সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদেক মিয়া, সাবেক যুবদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ আলী, ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা জসিম, সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জামাল মিয়া প্রমূখ।