প্রকাশিত: ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ২০, ২০২৫
ছাতক প্রতিনিধি : ছাতকস্থ সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবন ণির্মাণের ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে নানা ক্ষোভ।বিগত ৭ মাস ধরে ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেটি বার-বার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন ভবন তৈরীতে জটিলতা নিরসন এবং কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলামের সহযোগিতা কামনা করেছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয় এলাকার কয়েকটি গ্রামের লোক সহ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, সাবেক জনপ্রতিনিধি-শিক্ষকবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাত করেন।
এ সময় ছাতক সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তুলসি চরণ দাস, জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিব্বির আহমেদ, সাবেক পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর আলী বাদশা, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছালেক মিয়া, স্থানীয় ফরিদ মিয়া, আব্দুর রশীদ, রেদোয়ান আহমদ, মাসুম আহমেদ, মাহমুদ আলী, সিরাজ মিয়া, সৈয়দ আহমদ লেচু, আতাউর রহমান, আবুল হোসেন, ইউসুফ আলী, জহুরুল হক, আবুল খায়ের, শিক্ষক তমাল পোদ্দার, আহসান হাবীব, একরাম উদ্দিন, মাহমুদুল হাসান, মহসিন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,গত বছরে বিদ্যালয়টি নতুন একটি একাডেমিক ভবনের বরাদ্দ পায়। সে অনুযায়ী ভবনের স্থানে নির্ধারণ ও সয়েল টেস্ট করা হয়। এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রকৌশলীরা একাধিকবার নতুন ভবন নির্মাণের জায়গা পরিদর্শন করেছেন। ভবন নির্মাণের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা থাকলেও বার-বার পিছিয়ে যাচ্ছে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ। যা এখনো শুরু করা হয়নি।
এ ব্যাপারে জানাগেলো নতুন ভবন নির্মাণের জমিতে রয়েছে ছোট-বড় কয়েকটি গাছ। আর এ গাছগুলো কর্তনের সুযোগ নিয়েছেন বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শরীফ উদ্দিন। তার অপকৌশলের কারনেই নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ বার-বার পিছিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্যাডে তার স্বাক্ষরিত গত ১৭ ফেব্রুয়ারী ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত আবেদনে নতুন ভবনের জায়গায় ২০ টি গাছ রয়েছে উল্লেখ করে গাছগুলো কাটার আবেদন করেন। মুলত এ জমিতে ২০ টি গাছের কোন অস্থিত্ব নেই। তার এ আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ছাতক বিট-ফরেষ্ট কর্মকর্তাকে বলেন।
ছাতক বিট-ফরেষ্ট কর্মকর্তা (ফরেস্টার) আইউব খান সরজমিনে গিয়ে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জায়গায় কতটি গাছ রয়েছে এবং সেই গাছগুলোর মাপ-যোক করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জায়গায় মাত্র ছোট বড় ১০ টি গাছ এবং মূল্য বাবদ ৮হাজার ৯’শত ৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ওই সময় বিট কর্মকর্তা আইউব খান বলেন, গাছ গুলো জ্বালানি ছাড়া তেমন মূল্যবান নয়।
সে সময়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শরীফ উদ্দিনের দেওয়া আবেদনে গাছের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার কারনে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ওই সময় প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু শরীফ উদ্দিন তার অসৎ উদ্দেশ্যই শিক্ষকদের প্রতিবাদ আমলে না নিয়ে নিজ ইচ্ছায় আবেদন করেন।
পরিশেষে দেখা গেছে তার দায়িত্বকালীন সময় এবং তার ভুঁয়া ২০ টি গাছ কাটার আবেদন ও ছাতক বিট-ফরেষ্ট কর্মকর্তার দেওয়া রিপোর্টে ফারাক। এখানে আবেদনে ২০ টি বড় গাছ উল্লেখ করা তদন্তে পাওয়া যায় ছোট ১০ টি গাছ। স্থানীয় লোকজন জানান, সাবেক প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ইচ্ছে করেই জটিলতার সৃষ্টি করে রেখেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর আলী বাদশা বলেন, পড়া-লেখার সুষ্ঠু পরিবেশ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণী কক্ষ প্রয়োজন। বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজ দ্রুত শুরু হলে এলাকাবাসী উপকৃত হবে। সাবেক পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেন বলেন, বিদ্যালয়ের একটি একাডেমিক ভবন তৈরী হলে ছাত্র-ছাত্রীরা এটার সুফল ভোগ করবে। কাজেই পড়ালেখার সুবিধার্থে বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণ আবশ্যক। বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছালেক মিয়া জানান, এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির একটি ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে আসছে। বৃষ্টির সময় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে এবং শ্রেণী সংকট বিদ্যমান রয়েছে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা কাল থেকে এ পর্যন্ত নতুন কোন একাডেমিক ভবন বরাদ্দ পায়নি। দীর্ঘদিন পর এখন যেহেতু নতুন একটি ভবন বরাদ্দ পাওয়া গেছে, বিদ্যালয় ও শিক্ষার স্বার্থে ভবন তৈরীতে সকল জটিলতা নিরসন করে ভবনের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিব্বির আহমেদ বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর উন্নয়ন হলে এটার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তাই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন একটি একাডেমিক ভবন জরুরী। ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ছাতকস্থ সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন একটি ভবন ণির্মাণের নির্ধারিত স্থানে গাছ কাটার বিষয়টি নিয়ে পুনরায় যাচাই বাছাই করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপদেষ্টা মন্ডলির সভাপতি : লন্ডন প্রবাসি বিশিষ্ট সমাজকর্মী কবি ইমদাদুন খান
সম্পাদক : জাকিয়া সুলতানা মনি
প্রধান বার্তা সম্পাদক : আবুল হোসেন
যোগাযোগ: চিফ নিউজ এডিটর: আবুল হোসেন, সুরমা মার্কেট সিলেট, +8801725167503
জয়েন্ট নিউজ এডিটর: আব্দুস সামাদ আফেন্দি নাহিদ, সুনামগঞ্জ +8801312125827
হেড অব নিউজ: মোসফিকুর রহমান স্বপন, সুনামগঞ্জ 01756464823
ডেক্স ইনচার্জ: রোকন উদ্দিন,তাহিরপুর +8801785752013
ইমেলঃ vatirkantho@gmail.com
Design and developed by Web Nest