প্রকাশিত: ৩:২৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
আব্দুস সামাদ আফিন্দি,বিশেষ প্রতিনিধিঃঃ
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের ব্রাহ্মনগাঁও
গ্রামে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার বাস করেন। কিন্তু এখানে বিশুদ্ধ পানি পান করার জন্য নেই কোনো টিউবওয়েল । মানুষ বাধ্য হয়ে পুকুর, খাল-বিল ডোবা কিংবা কাছাকাছি গ্রামের টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করে আসছেন প্রায় তিনবছর যাবত। অনেক সময় বিশুদ্ধ পানি পান না করার কারণে পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
বিশেষ করে বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। তখন অনেকেই ডায়রিয়া, জন্ডিস, আমাশয়সহ নানা রোগে আক্রান্ত হন।
নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়। এক কলস পানির জন্য অনেক কষ্ট করে নারীদের পায়ে হেঁটে দুই কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী গ্রাম ফাজিলপুর ও শুকদেবপুর যেতে হয়। সেখানেও গিয়ে লম্বা লাইন। কখনও আবার পানির অভাবে নদীর পানিই পান করতে হয়। রান্না-বান্না, নাওয়া-খাওয়ার জন্য নদীর পানিই একমাত্র ভরসা তাদের।
এতে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে।
অনেককে সকালে উঠে দীর্ঘ পথ হেঁটে পানি আনতে হয়। এতে সময় ও শ্রম দুই-ই নষ্ট হয়, পাশাপাশি স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখাও ব্যাহত হয়।
সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছেন, তাদের গ্রামে অতি দ্রুত টিউবওয়েল স্থাপন করে নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার।
অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে বসবাস করছেন তারা । নেই স্বাস্থ্য সম্মত ল্যাট্রিন। আধুনিক সভ্যতার বিন্দুমাত্র ছোঁয়া লাগেনি এ পল্লীতে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও কোনো খোঁজ-খবর রাখেননা বলেও অভিযোগ তাদের।
ব্রাম্মনগাও গ্রামের সত্যজিৎ দাস, পানো কুমার দাস সহ একাধিক ব্যক্তি জানান,
, দূর-দূরান্ত থেকে পানি আনতে নারীদের বেশি সমস্যা,পানি আনতে বিভিন্ন ধরনের‘ সমস্যায় পড়তে হয়, মাঝে মাঝে বখাটেদের উৎপাতের শিকারও হতে হয়। মাঝে মধ্যে যদিও আমরা বাড়ির পুরুষরা এতে সহযোগিতা করি । কিন্তু আমরা (পুরুষরা) বাড়িতে সবসময় তো থাকিনা।
গীতা রানী দাস বলেন, আধা কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী গ্রাম ফাজিলপুর থেকে একটি টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে গেলেও সেখানে লম্বা লাইন থাকে। এতে করে প্রতিনিয়ত আমরা বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভোগছি। আমাদের গ্রামে কবে যে একটা কল (টিউবওয়েল) হইবো আমরা শান্তি মতে পানি খাইতে পারমু। সরকারের নিকট আমাদের দাবি সরকার যেনে আমাদের গ্রামে কলের (টিউবওয়েল) ব্যবস্থা করে দেয়।
ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের গৃহবধু ঝর্ণা দাস, জয়া দাস জানান, আমাদের এক কলস পানি আনতে বহু দূর যেতে হয়, দিনের বেলায় পানি আনলেও রাতে খুব কষ্ট করতে হয়। অনেক সময় পানি না খাইয়া থাকতে হয়। আমাদের দাবি গ্রামে যেনো টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
অনেক সময় ঝড়-তুফান হলে পানির কষ্ট পেতে হয়।
এছাড়াও আমাদের পল্লীতে রাস্তাঘাট কিছুই নেই, লেপটিন (ল্যাট্রিন) নেই, আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। আমাগো দুর্ভোগ দেখার কেউ নাই।
এ বিষয়ে সাচনা বাজার ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক মিয়া জানান, আমার ইউনিয়নের ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের এই সমস্যা টি আমাকে গত একমাস আগে অবগত করেছেন, আমি সরজমিনে গিয়ে দেখেছি ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামার কারণে কোনো টিউবওয়েলে পানি আসছে নাহ তাই আমি দুটি সাবমারসিবল টিউবওয়েল বরাদ্দ দিয়েছি । প্রকল্পের টিকাদারের শ্রমিক সংকটের কারণে কাজটি পিছিয়ে আছে। তবে অল্প কিছুদিনের ভিতরেই টিউবওয়েল দুটি স্থাপন করা হবে । পাশাপাশি এই গ্রামে স্বাস্থ্য সম্মত ল্যাট্রিন দেওয়ার জন্য প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কর্মকর্তা রামকুমার সাহা জানান, বন্যা প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামে দুটি সাবমারসিবল টিউবওয়েল বরাদ্দ হয়েছে। বৈশাখ মাসের কারণে সবাই ধান তুলতে ব্যস্ত টিউবওয়েলের কাজের জন্য লোক সংকট থাকায় দেরি হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি অতি দ্রুত এই গ্রামে দুটি টিউবওয়েল স্থাপন করার। আশা করছি অতি দ্রুত টিউবওয়েলের কাজ শেষ হবে।
উপদেষ্টা মন্ডলির সভাপতি : লন্ডন প্রবাসি বিশিষ্ট সমাজকর্মী কবি ইমদাদুন খান
সম্পাদক : জাকিয়া সুলতানা মনি
প্রধান বার্তা সম্পাদক : আবুল হোসেন
যোগাযোগ: চিফ নিউজ এডিটর: আবুল হোসেন, সুরমা মার্কেট সিলেট, +8801725167503
জয়েন্ট নিউজ এডিটর: আব্দুস সামাদ আফেন্দি নাহিদ, সুনামগঞ্জ +8801312125827
হেড অব নিউজ: মোসফিকুর রহমান স্বপন, সুনামগঞ্জ 01756464823
ডেক্স ইনচার্জ: রোকন উদ্দিন,তাহিরপুর +8801785752013
ইমেলঃ vatirkantho@gmail.com
Design and developed by Web Nest