প্রকাশিত: ৬:৩৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩
স্টাফ রিপোর্টার: কবিতা, গবেষণা ও বাউল গানে সুনামগঞ্জের তিন গুণীজনকে সম্মাননা দিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। ১৯ জানুয়ারি বৃহষ্পতিবার রাতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত দুদিনব্যাপী ‘সুনামগঞ্জ জেলা সাহিত্য মেলা’ অনুষ্ঠানে বাউল গানে মকদ্দস আলম উদাসী (মরণোত্তর), গবেষণায় কবি ও গবেষক ইকবাল কাগজী এবং কবিতায় অধ্যাপক মোস্তাক আহমাদ দীনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। সাহিত্য মেলার প্রধান অতিথি বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট কবি এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক গুণীজনদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন। গত ১৮ জানুয়ারি বুধবার জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসন রাজা মিলনায়তনে সাহিত্যমেলা শুরু হয়। ১৯ জানুয়ারি শেষ হয় এই মেলা।
দু’দিন ব্যাপী সাহিত্য মেলা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক কবি মোহাম্মদ জাকির জাফরানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ড. মোহাম্মদ সাদিক। এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. কুতুব উদ্দিন।
সম্মাননা প্রাপ্ত দুই গুণীজন কবি ইকবাল কাগজী ও কবি মোস্তাক আহমাদ দীন সম্মাননা প্রাপ্তিতে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বাউল মকদ্দস আলম উদাসীর পক্ষে তার একমাত্র ছেলে বুলবুল উদাসী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথি বৃন্দের কাছ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট, উত্তরীয় এবং আর্থিক সম্মানী গ্রহণ করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, আজ গুণী যে তিনজনকে পুরস্কার দেওয়া হলো আমি তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আমিও তাদের সঙ্গে দীর্ঘ পথপরিক্রমার যাত্রী। মোস্তাক আর আমি একই গুরুর শীষ্য। আমাদের গুরু প্রফেসর ড. তপোধীর ভট্টাচার্য্য যার অধীনে আমরা দুজন পিএইচডি করেছি। আমার পিএইচডি গবেষণাটি প্রকাশ করেছে এশিয়াটিক সোসাইটি এবং মোস্তাকেরটি করেছে বাংলা একাডেমী। ইকবাল কাগজী ও মোস্তাক আহমাদ দীন দু’জনই গবেষণায় সিদ্ধ হস্ত। এই দুই কবি গবেষণায়ও সফল। গবেষণায় তাদের ঈর্ষণীয় সাফল্য আছে। রাজধানীতে যখন কবি মোস্তাক আহমাদের নাম স্মরণ করা হয় তখন অনেকেই নড়েচড়ে বসেন। তাকে এই সম্মাননা দিতে পেরে আমাদের দায়মুক্তি হয়েছে। আয়োজকরা এমন তিন গুণীকে খুজে বের করে সম্মাননা দেওয়ায় জেলা প্রশাসন কৃতিত্বের দাবি রাখে।
বাউল মকদ্দস আলম উদাসী সম্পর্কে ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, মকদ্দস আলম উদাসী আসলেই প্রকৃত একজন উদাসী ছিলেন। তিনি লোককবি আফজাল শাহর অনুসারী ছিলেন। আফজাল শাহর নামে গোবিন্দগঞ্জ রেল স্টেশন ও ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের নাম আছে। তিনি অনেক বড়ো কবি ও গ্রন্থকার ছিলেন। লোকজীবনে তাকে কেউ চিনতোনা। তিনি সাদা কাপড় পড়ে থাকেন। এই সাধকের খাদেম আমার সঙ্গে উদাসীকে পরিচয় করে দিয়েছিলেন। তিনি একজন প্রকৃত ফকির ছিলেন। কোন চাওয়া পাওয়া ছিলনা। সরকারিভাবে তাকে জায়গা, জমি ও ঘর করে দেয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি ঘর নেননি। তিনি এতটাই সৎ ছিলেন যে তার কোন মোহ ছিলনা। তাই এমন একজন সাধকের সৃষ্টি গুলো প্রকাশ করা আমাদের দায়িত্ব। আমি তার সৃষ্টি প্রকাশ করার জন্য জেলা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সম্মাননা অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পীরা সঙ্গীত, আবৃত্তিকাররা আবৃত্তি এবং নৃত্যশিল্পীরা মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করেন।
এদিকে দুপুর থেকে সাহিত্যমেলার দ্বিতীয় দিনে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত কবি সাহিত্যিকরা তাদের স্বরচিত লেখা পাঠ করেন। কবিতা পাঠ করেন কবি জাকির জাফরান, সুখেন্দু সেন, পুলিন রায়, কবি ইকবাল কাগজী, নির্মল ভট্টাচার্য্য, কুমার সৌরভ, এসএম আব্দুর রাহমান, নাসরিন আক্তার খানম, সুবাস উদ্দিন, রবীন্দ্র চন্দ্র দাস, কল্লোল তালুকদার চপল, জীবনকৃষ্ণ সরকার, মশিউর রহমান, মাহমুদ আলী, শামস শামীম, অসীম সরকার, জেনারুল ইসলাম, অজয় রায়, বিশ্বজিৎ রায়, পঙ্কজ শীল, জেনারুল ইসলাম, ইয়াকুব শাহরিয়ার, গিলেমান আলম, চম্পা তালুকদার, জান্নাত আরা, উপানন্দ দাসসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত লেখকরা তাদের রচনা পাঠ করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক – জাকিয়া সুলতানা
ঠিকানা – সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল পয়েন্ট, সুরভী ১২/২ হাছন নগর সুনামগঞ্জ।
মোবাইল নাম্বার ০১৩১০৮৬৮৩১৩
email- noorerfouara94@gmail.com
Design and developed by Web Nest