জামালগঞ্জে গোয়েন্দা কায়দায় ছাত্র সমাজের অভিযানে ভারতীয় মদ উদ্ধার

প্রকাশিত: ৪:০৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২৪

জামালগঞ্জে গোয়েন্দা কায়দায় ছাত্র সমাজের অভিযানে ভারতীয় মদ উদ্ধার

আব্দুস সামাদ আফিন্দী, জামালগঞ্জ::

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায়
মঙ্গলবার (২৭ আগষ্ট) সকালে উপজেলা সদর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের চন্দনা হাটি থেকে ভারতীয়  বিভিন্ন ব্যান্ডের ৪ বস্তার মোট ২৫০ পিস ভারতীয় বিভিন্ন ব্রান্ডের কয়েক লাখ টাকা মূল্যের মদের বোতল উদ্ধার করেছে ছাত্র-জনতা। এ ঘটনার খবর জানা-জানি হলে জামালগঞ্জ থানার এসআই মিহির চন্দ্র দাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে মদের বোতল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।  

এ ঘটনায়  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার ভোরে একই গ্রামের তাসকিন (১৫), নয়ন (১৩) পুকুর সেচে মাছ ধরার  উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে  ৪ জন ব্যক্তি মাথায় করে বস্তা ভর্তি কি নিয়ে যাচ্ছে দেখতে পায় তারা। তখন ভোরের আলোয় প্রষ্পুটিত হয়নি চারি দিক। মৃদু অন্ধকার থাকায় আঁচ করে পারে নি বস্তায় কি ছিল। একটু দূর যাওয়ার পর দেখে যে, একজনের বস্তা ভারের কারনে মাটিতে রেখে দিচ্ছে । তাসকিন ও নয়ন কাছাকাছি এলে তাদেরকে বস্তাটি মাথায় তুলে দিতে বলে। তাসকিন বস্তায় কী জানতে চাইলে তিনি   জানান, এটা ধানের বস্তা। তাসকিন হাত দিয়ে দেখে সেটা ধানের বস্তা না।বার বার জানতে  জানতে চাইলে তাসকিনকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখায় এবং বাড়িতে না বলার জন্য বলে দেয়। কৌশল করে সঙ্গী তিনজন আসার পূর্ব পর্যন্ত আটক রাখে তাদের।

তিনজন বস্তা রেখে  ঘটনাস্থলে ফিরে আসলে তাসকিন দেখতে পায়  এদের মধ্যে একজন সাহাবুদ্দিন অপরজন তাজুল ইসলাম। পূর্বেও সাহাবুদ্দিন ২ বার মাদক মামলায় আটক হয়ে জেলও খেটেছেন। অন্য দুইজনকে তারা চিনতে পারে নাই।তাসকিন ও নয়নকে তারা নগদ টাকার লোভ ও ছুরি দিয়ে হুমকি দেয়। তারা সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে এসে ঐসব ঘটনা বলে দেয়।

পরিবার এতে  নিরুপায় হয়ে স্থানীয় ছাত্র সমাজকে অবগত করেন। প্রাথমিক অবস্থায় ছাত্ররা সেখানে উপস্থিত হলে ঘটনাস্থলে তা পাওয়া যায়নি। হাওরের যেই রাস্তা দিয়ে বস্তা নিয়ে গিয়েছিল তারই সূ্ত্র ধরে অর্থাৎ অসংখ্য পায়ের চিহ্ন দেখে দেখে ছাত্ররা পুকুরে তল্লাশি চালিয়ে এক বস্তা উদ্ধার করে। উদ্ধারকালে সাহাবুদ্দিনের সহোদর বড় ভাই বেতার উদ্দিন জানান  তা ধানের বস্তা। স্থানীয় ছাত্ররা সম্পূর্ণ বস্তা তোলার পর মদের বোতল দেখতে পায়।উদ্ধারের পর সবাই বেতার উদ্দিন, সাহাবুদ্দিন ও তাজুলসহ অজ্ঞাত দুইজন পলায়ন করেন। 

এরই মধ্যে একজন ছাত্র সহায়তা চেয়ে ৯৯৯  ফোন করলে কিছুক্ষণ পর জামালগঞ্জ থানার পুলিশ এসে উদ্ধার কৃত মদের বোতল জব্দ করে নিয়ে যান। এ সময় ছাত্ররা জানায়, বেতার উদ্দিন, তাজুল ও সাহাবুদ্দিনের  বাড়িতে তল্লাশি করার প্রয়োজন। তক্ষণাৎ পুলিশ বাড়িতে এসে তল্লাশি চালালে কোন কিছু পাননি।

পরে, পুলিশের সামনে রেখে তারা আবার পুকুরে নামে। পাশাপাশি কয়েকটি পুকুর তল্লাশি করার পর আরো তিন বস্তা ভারতীয় মদ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পুলিশ চার বস্তায় মোট ২৫০ বোতল মদ  জব্দ করে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাসকিন ও নয়নের পরিবার এখন সংশয়ে রয়েছে।

এ ব্যাপরে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার দাস বলেন, চাঁনপুর থেকে শিক্ষার্থীদের জানানোর পর পুলিশ পাঠিয়ে ৪ বস্তা মদের বোতল জব্দ করা হয়েছে। এর সাথে জড়িত শাহাব উদ্দিন, বেতার উদ্দিন ও তাজুল ইসলামকে আসামী করে মামলা দায়ের হয়েছে।, তারা অতীতও এমন অপকর্মে জড়িত থাকার তথ্য জানা গেছে।  অপরাধীদের বিরুদ্ধ বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুব দ্রুতই আসামীদের আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি ছাত্র সমাজকে ধন্যবাদ দিয়ে সব সময় পাশে থাকার আশ্বাস দেন।