তাহিরপুরে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা ও গণ অবস্থান কর্মসূচি

প্রকাশিত: ২:১৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৪, ২০২৪

তাহিরপুরে  শিক্ষার্থীদের সচেতনতা ও গণ অবস্থান কর্মসূচি

আব্দুস সামাদ আফিন্দী, বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সারা দেশের ন্যায় বিভিন্ন পাবলিক, প্রাইভেট ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা ও গণ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাজের উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়, কলেজে এই কর্মসূচি পালিত হয়। সকাল থেকে তাহিরপুর উপজেলা থেকে অধ্যয়নরত বিভিন্ন পাবলিক, প্রাইভেট এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
উপজেলার বাগলী উচ্চ বিদ্যালয়, ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, চাঁনপুর উচ্চ বিদ্যালয়, হামিদ-হালিমা মডেল বিদ্যানিকেতন, হাওর বাংলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট, কলাগাঁও চারাগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, কলাগাঁও জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। এসময় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষক – শিক্ষিকাগণ উপস্থিত ছিলেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম রাহাত বলেন, ‘সারা দেশের ন্যায় তাহিরপুরের ছাত্রসমাজও ঐক্যবদ্’ আদর্শ, স্মার্ট তাহিরপুর বিনির্মানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করতে চাই। শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করতে পারলে এই ভাটি অঞ্চল থেকেও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃত্ব দিবে আমাদের তাহিপুরের শিক্ষার্থীরা।” শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজিব আহমেদ রবিন বলেন, ” আদর্শ সমাজ বিনির্মানে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে হবে সাধারণ মানুষদের। সবাইকে নিয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুন্দর বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে। যেখানেই অন্যায়-অবিচার হবে, সেখানেই শিক্ষার্থীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।”শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এহছানুল হক মিলন বলেন,”বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, শিক্ষার্থীরা শুধু নিজের জন্য নয়,সমগ্র জাতির জন্য লড়াই করতে পারে এবং সফলতা অর্জন করতে পারে। আমাদের দেশের ছাত্রদের তথা আমাদেরকেই সেই ঐতিহ্যের ধারক হয়ে আগামীতে দেশকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তাই আমাদের সকলের প্রধান দায়িত্ব হলো মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদেরকে গড়ে তোলা আর নেতৃত্বের মূলমন্ত্র হলো নৈতিকতা।এজন্য আমাদেরকে ন্যায়, সততা ও সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে কাজ করতে হবে। ন্যায়ের পথে দৃঢ়তা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ – এটাই প্রকৃত নেতৃত্বের পরিচয়। তাছাড়া সমাজের প্রতিও আমাদের সকলের দায়িত্ব আছে, নির্যাতিত ও অবহেলিত মানুষের পাশে আমাদের দাড়াতে হবে।”


কর্মসূচীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য দশটি দাবি পেশ করা হয়। তা হলো, স্কুল – কলেজে শিক্ষামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, শিক্ষায় ও সামাজিক সকল বৈষম্য নিরসনে এগিয়ে আসা, আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ছাত্রদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা, সমাজের সকল প্রতিকূলতা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ছাত্র সমাজকে সজাগ দৃষ্টি রাখা, যেখানে সহিংসতা, ও বিশৃঙ্খলা সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে ছাত্রসমাজ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে, পরিবেশ রক্ষায় ছাত্র সমাজ বিভিন্ন ভূমিকা ও কর্মসূচি রাখবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় কাজ করবে, মাদক ও চোরাচালান বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করবে, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও ঘুষ বাণিজ্যিকে না বলা, দেশের স্বার্থে জনগণের কল্যাণে কাজ করা ইত্যাদি।