বাল্কহেডের ধাক্কায় হুমকির মুখে আনোয়ারপুর সেতু

প্রকাশিত: ১২:৪১ অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২৪

বাল্কহেডের ধাক্কায় হুমকির মুখে আনোয়ারপুর সেতু

তাহিরপুর সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নে রক্তি নদীর ওপর আনোয়ারপুর বাজার সংলগ্ন স্থানে সেতু নির্মিত হয় ২০১১ সালে। ১২৫ মিটার দীর্ঘ এই সেতুটি ‘আনোয়ারপুর সেতু’ নামে পরিচিত। যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয় ওই বছরের ১ অক্টোবর। আনোয়ার পুর সেতুটি চালু হওয়ায় জেলার পশ্চিম দিকের হাওরপাড়ের বাসিন্দাদের জেলা ও বিভাগীয় সদরে যাতায়াতের পথ সহজ হয়।

কিন্তু সেতুটির নীচ দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক বাল্কহেড (মালবাহী বড় নৌযান) চলাচলের সময় খুঁটিতে ধাক্কা লাগে। এতে করে ঝুঁকিতে পড়েছে সেতুটি।
স্থানীয় এলাকাবাসী সেতুটির নীচ দিয়ে বাল্কহেড চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রামের একজন বাসিন্দা সেতুটি রক্ষায় এর নীচ দিয়ে বাল্কহেড (বড় নৌযান) বন্ধের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালের ১ অক্টোবর সেতুটির যানবাহন চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। আনোয়ারপুর সেতুটি চালু হওয়ায় সুনামগঞ্জের সাথে তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়। এতে করে তাহিরপুর ছাড়াও ধর্মপাশা, বিশম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, মধ্যনগর ও নেত্রকোণা জেলার একাংশের বাসিন্দারা সহজে সুনামগঞ্জে যাতায়াত করতে পারেন। সেতুটির নীচ দিয়ে প্রতিদিন এক শরও অধিক বড় নৌযান (বাল্কহেড) প্রতিদিন চলাচল করে থাকে।

একটি বাল্কহেডে ২০ হাজার ফুট পর্যন্ত পাথর/বালু পরিবহন করা হয়। বড় নৌযান সেতুর নীচ দিয়ে যাতায়াতকালে সেতুর খুঁটিতে ধাক্কা লাগে। এতে করে ঝুঁকিতে পড়েছে সেতুটি। এ সকল বাল্কহেড সেতুটির ৫ কিলোমিটার উত্তরে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর লাউড়েরগড় এলাকা থেকে বালু/পাথর পরিবহন করে থাকে।

উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা সাহাঙ্গীর কবির ৮ জুলাই এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছেন।

আবেদনে তিনি বলেছেন, বাল্কহেড নৌকা বালু পাথর বোঝাই করে সেতুটির নীচ দিয়ে চলাচলের সময় সেতুর খুঁটিতে ধাক্কা লাগে। বাল্কহেডের ধাক্কায় প্রতিদিন সেতুটির খুঁটি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ সকল বড় নৌযানের আঘাতে যেকোনো সময় সেতুর খুঁটি ভেঙে যেতে পারে।ইতিমধ্যে সেতুটির পূর্ব পাড়ে এপ্রোচের মাটি সরে গিয়ে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তিনি সেতুর নীচ দিয়ে বড় মালবাহী নৌযান (বাল্কহেড) চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। আবেদনের অনুলিপি তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রী,মাননীয় সংসদ সদস্য, বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়, মাননীয় জেলা প্রশাসক ও তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট আরো অনেক দপ্তরে পাঠিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বাবুল মিয়া জানান, সেতুর খুঁটিতে ধাক্কা লেগে একাধিক বাল্কহেড ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এসব ধাক্কায় খুঁটিতে স্থাপিত লোহার পাত ভেঙে পড়েছে। বাল্কহেডের ধাক্কায় যেকোনো সময় সেতুর খুঁটি ভেঙে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সেতুর নীচ দিয়ে বাল্কহেড চলাচল বন্ধের জন্য এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছেন।

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন জানান,তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে একমাত্র যাতায়াতের জন্য রক্তি নদীর উপর ব্রীজটি বড় বড় বাল্কহেডের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস্ত যেন না হয় সে বিষয়ে ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভিন বলেন, ব্রীজটি রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কে বলা হয়েছে। আমরা একটি আবেদন পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।