প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২৪
তাহিরপুর সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নে রক্তি নদীর ওপর আনোয়ারপুর বাজার সংলগ্ন স্থানে সেতু নির্মিত হয় ২০১১ সালে। ১২৫ মিটার দীর্ঘ এই সেতুটি ‘আনোয়ারপুর সেতু’ নামে পরিচিত। যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয় ওই বছরের ১ অক্টোবর। আনোয়ার পুর সেতুটি চালু হওয়ায় জেলার পশ্চিম দিকের হাওরপাড়ের বাসিন্দাদের জেলা ও বিভাগীয় সদরে যাতায়াতের পথ সহজ হয়।
কিন্তু সেতুটির নীচ দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক বাল্কহেড (মালবাহী বড় নৌযান) চলাচলের সময় খুঁটিতে ধাক্কা লাগে। এতে করে হুমকিতে পড়েছে সেতুটি।
স্থানীয় এলাকাবাসী সেতুটির নীচ দিয়ে বাল্কহেড চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন যাবৎ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালের ১ অক্টোবর সেতুটির যানবাহন চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।আনোয়ারপুর সেতুটি চালু হওয়ায় সুনামগঞ্জের সাথে তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়। এতে করে তাহিরপুর ছাড়াও ধর্মপাশা, মধ্যনগর,বিশম্ভরপুর,জামালগঞ্জ ও নেত্রকোণার জেলার একাংশের বাসিন্দারা সহজে সুনামগঞ্জে যাতায়াত করতে পারেন।সরাসরি গাড়ি যোগে তাহিরপুরের টাংগুয়ার হাওড়ে পর্যটকদের আগমন ঘটে।সেতুটির নীচ দিয়ে প্রতিদিন এক শরও অধিক বড় নৌযান (বাল্কহেড) প্রতিদিন চলাচল করে থাকে।
একটি বাল্কহেডে ২০ হাজার ফুট পর্যন্ত পাথর/বালুবাহী বাল্কহেড এসে ধাক্কা দিলে কখনো ব্রীজটি কয়েক ফুট সড়ে যায়।এতে করে হুমকিতে পড়েছে সেতুটি।
এ সকল বাল্কহেড সেতুটির ৫ কিলোমিটার উত্তরে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর লাউড়েরগড় এলাকা থেকে বালু/পাথর পরিবহন করে থাকে।
উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বালিজুরী গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস আলম বলেন,আমি ২০২১ সালে ২৮ জুন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছিলাম, যাতে জাতীয় সম্পদ রক্ষা ও গণযোগাযোগ সচল রাখার স্বার্থে সেতুর নিচ দিয়ে বাল্কহেড নৌকা বালু পাথর বোঝাই করে চলাচল বন্ধ করে দেয়ার জন্য।ইহাতে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তাহিরপুর উপজেলার ইউএনও মহোদয় পুলিশ বিজিবি যৌথ বাহীনি সরজমিনে গিয়ে সেতুর নিচ দিয়ে বড় বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করে দেন।এব্যাপারে সেতুর পশ্চিম পাড়ে একটি লোহার দন্ড দিয়ে সাইনবোর্ডে বড় নৌযান চলাচল নিষিদ্ধের নেটিশও রয়েছে।কিছুদিন বন্ধের পরই অদৃশ্য কারণে আবার বাল্কহেড নৌযান চলাচল শুরু হয়,যা এখনো বিদ্যমান।
বালিজুরি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন বলেন, আনোয়ারপুর ব্রীজটি ইদানীং ড্রেজারের লোড করা বালিবাহী নৌজানের ধাক্কায় ক্ষতির সম্মুখীন। তাই জনস্বার্থে ব্রীজটি রক্ষা করা অতীব জরুরি।
বালিজুরি ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য বাবুল মিয়া বলেন ,সেতুর খুঁটিতে ধাক্কা লেগে একাধিক বাল্কহেড ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এসব ধাক্কায় খুঁটিতে স্থাপিত লোহার পাত ভেঙে পড়েছে। বাল্কহেডের ধাক্কায় যেকোনো সময় সেতুর খুঁটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সেতুর নীচ দিয়ে বাল্কহেড চলাচল বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছেন।আমরা জনসার্থে জরুরি ভিত্তিতে সেতুটির নিচ দিয়ে বাল্কহেড বন্ধের দাবি জানাই।
বালিজুরী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি জিয়া উদ্দিন বলেন, আনোয়ারপুর সেতুর নীচ দিয়ে বড় বড় বাল্কহেড চলাচলের কারণে সেতুটি চরম ঝুঁকিতে আছে।
এই নৌপথে চলাচলকারী অধিকাংশ বাল্কহেড কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর নৌ-পরিবহন শ্রমিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের অন্তর্ভুক্ত। এই সেতুটি দিয়ে হাওরাঞ্চলের মানুষ জেলা সদরে কম সময়ে যাতায়াত করতে পারে । এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন হাওরাঞ্চলের মানুষের চলাচলের সার্থে সেতুটিকে রক্ষা করতে এর নিচ দিয়ে বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করার দাবী জানাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভিন বলেন,বাল্কহেডের ধাক্কায় সেতুর ক্ষতি হচ্ছে গন মাধ্যম কর্মীদের নিকট থেকে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কে সেতুর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে। আমরা আগামী সমন্বয় সভায় আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক – জাকিয়া সুলতানা
ঠিকানা – সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল পয়েন্ট, সুরভী ১২/২ হাছন নগর সুনামগঞ্জ।
মোবাইল নাম্বার ০১৩১০৮৬৮৩১৩
email- noorerfouara94@gmail.com
Design and developed by Web Nest