প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২২
ভাটির কন্ঠ ডেস্ক :: গত এপ্রিলের অকালবন্যায় সুনামগঞ্জে বেশ কয়েকটি হাওরে ফসলহানি ঘটে। এরপর সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে ঘোষণা দেন, এবার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজের প্রাথমিক প্রক্রিয়া অক্টোবরে শুরু হবে। কিন্তু সেটি হয়নি। নভেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্প নির্ধারণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের কথা। এখনো তার কিছুই হয়নি। ফলে এবারও হাওরে বাঁধের কাজ যথাসময়ে শুরু ও শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কায় কৃষকেরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলছেন, এখনো অনেক হাওরে পানি রয়েছে। এ অবস্থায় ১২টি উপজেলায় ২৭টি দল জরিপকাজ করছে। কাজ প্রায় শেষ।
এখন যেখানে সম্ভব সেখানে পিআইসি গঠন করে নির্ধারিত ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু হবে।
সংকটকালে প্রশাসন ও পাউবো কর্মকর্তারা যেসব কথা বলেন, সংকট কেটে গেলে সেটি তাঁরা ভুলে যান বলে অভিযোগ করেছেন ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলনের’ নেতারা। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, ‘গত বছরের অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না। এবারও শুরুতে যা দেখছি, কাজে চ্যালেঞ্জ আছে। এক মাস চলে গেছে, এখনো পিআইসি হয়নি। তাহলে ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু হবে কীভাবে?’ বিজন সেন মনে করেন, নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হলেও সেটা হবে লোকদেখানো। সব প্রকল্পে যথাসময়ে কাজ শুরু এবং নির্ধারিত সময়ে শেষ করা গেলে ফসল ঝুঁকিতে পড়বে না।
■ গত ১০ নভেম্বর থেকে জেলার ১২টি উপজেলায় ২৭টি দল জরিপকাজ করছে।
■ কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত পিআইসির মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ করা হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী, স্থানীয়ভাবে কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত পাঁচ থেকে সাত সদস্যের পিআইসির মাধ্যমে বাঁধের নির্মাণ করা হয়। একটি পিআইসি সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার কাজ করতে পারে। নভেম্বর মাসে প্রকল্প নির্ধারণ ও পিআইসি গঠনের কাজ শেষ করে ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁধের কাজ শুরু হওয়ার কথা। কাজ শেষের সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু কখনোই সময়মতো কাজ শেষ হয় না।
সুনামগঞ্জে পাউবো ৪৬টি ছোট–বড় হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে। পাউবো সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (পওর বিভাগ-২) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা বলেন, অনেক স্থানে ইচ্ছা করলেও এখন কাজ শুরু করা যাবে না। হাওরে পানি আছে। তাই যেসব স্থান শুকিয়েছে, মাটি পাওয়া যাবে, কাজ করা সম্ভব সেখানে নির্ধারিত সময়েই কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনো জেলার বিভিন্ন হাওরে বাঁধ নির্মাণের জরিপকাজ চলছে। কোথাও প্রকল্প নির্ধারণ বা পিআইসি গঠন করা হয়নি।
শাল্লা উপজেলার দায়িত্বে থাকা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল কাইউম বলেন, তাঁর উপজেলায় এখানো কোনো পিআইসি গঠিত হয়নি। এই উপজেলায় ছয়টি বড় হাওরের মধ্যে দুটিতে এখনো অনেক পানি। জরিপকাজ প্রায় শেষ, এখন প্রকল্প নির্ধারণ করে পিআইসি গঠনের পর কাজ শুরুর পরিকল্পনা করছেন তাঁরা।
দিরাই উপজেলার দায়িত্ব থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী এ কে এম আবদুল মোনায়েম জানান, তাঁর উপজেলার পিআইসি গঠনের গণশুনানি চলছে। এটি শেষ হলেই তারা কাজ শুরু করবেন।
হাওর থেকে এখন পানি নামছে, ফলে যত দ্রুত সম্ভব বাঁধের কাজ শুরু করা উচিত বলে মনে করেন জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম (৪৬)। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা বলি, কিন্তু কাজ হয় না। এ কারণে ফসল নিয়ে শেষ দিকে কৃষকদের উদ্বেগের সীমা থাকে না।’
সম্পাদক ও প্রকাশক – জাকিয়া সুলতানা
ঠিকানা – সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল পয়েন্ট, সুরভী ১২/২ হাছন নগর সুনামগঞ্জ।
মোবাইল নাম্বার ০১৩১০৮৬৮৩১৩
email- noorerfouara94@gmail.com
Design and developed by Web Nest