প্রকাশিত: ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২৩
এম এ মান্নান, মধ্যনগর(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় এবছর রেকর্ড পরিমান সরিষার চাষ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক।গত বছরের তুলনায় এ বছর মধ্যনগর উপজেলায় ৪২ শতাংশ সরিষা চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা যায়।বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পার্শ্ববর্তী মাঠে সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ। অগ্রাহায়নের শীতল হাওয়ায় দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষা ক্ষেত। সরিষার রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। যেন সরিষার হলুদ হাসিতে স্বপ্ন দেখছে কৃষক।মাঠজুড়ে ফুলের মৌ-মৌ গন্ধে মধু সংগ্রহ করতে দলে-দলে উড়ে আসছে মৌমাছি।এতে করে সরিষার পাশাপাশি মধুও সংগ্রহ করছেন উদ্যেক্তাগণ। এ বছর প্রত্যেক সরিষা চাষী অধিক মুনাফা লাভ করবে বলেও মনে করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।বছরের পর বছর স্থানীয় জাত চাষ করে ফলন কম হওয়া ও উৎপাদনে সময় বেশি লাগায় কৃষকরা সরিষা চাষ কমিয়ে দিয়েছিল।ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা গেছে। গত ৩ বছর ধরে মৌসুমের শুরুতে কৃষি বিভাগ অধিক ফলনশীল (উফশী) বিনা-৯,বারি-১৪ ও বারি-১৭ জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে।উন্নত জাতের সরিষা চাষে ফলন বেশি হওয়ার পাশাপাশি সময়ও কম লাগে।এলাকার যে উচু জমিগুলো রয়েছে সেগুলোতে সরিষার ফসল ঘরে তুলার পরেও বোরো ফসল আবাদ করা যায়।তাই সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানা যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৪ ইউনিয়নে গত বছর সরিষা চাষ করা হয়েছিল ৩৫০ হেক্টর জমিতে। এ বছর এই ৪ টি ইউনিয়নেই সরিষার চাষ করা হয়েছে ৪৯৭ হেক্টর জমিতে,যা গত বছরের তুলনায় ৪২ শতাংশ বেশি।৪৯৭ হেক্টর জনিতে সরিষার উপৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫০ মেট্রিকটন যার আনুমানিক বাজার মূল্য ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। সরিষা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবছর মধ্যনগর উপজেলায় বিনামূল্যে ৩০০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সার ও উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করছেন বলেও জানান কৃষি অফিস।
উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের বংশীকুন্ডা গ্রামের শিক্ষক শামীউল কিবরিয়া জানান,এ বছর তিনি ১৬ বিঘা জমিতে বিনা-৯ ও বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন।ফসলে পোকার আক্রমণ বা অন্যান্য প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় দেখা না দিলে ভাল ফলন পাবেন বলেও জানান তিনি।
উপজেলার উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের কালিপুর গ্রামের মোহাম্মদ আমিনুল হক রানা বলেন,সরিষা কাটার পরেও বোরো ফসল চাষ করা যায়।জমিতে সরিষা চাষের সময় সার প্রয়োগ করলে বোরো রোপণের জন্য খুব বেশি সার দিতে হয় না। এতে বোরো ফসল চাষেও খরচ কম হয়।সরিষা কাটাই-মাড়াইয়ের পর সেটা বিক্রি করে বোরো ফসল চাষে খরচ করা যায়। আগামী বছর আরও অধিক পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করবেন বলেও তিনি প্রতিনিধিকে জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, আমরা সরিষা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারিভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি প্রণোদনা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে কৃষকদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের ৩৬ টি ওয়ার্ডে ভোজ্য তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করতে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।কৃষকরা যতক্ষণ ফসল ঘরে না তুলছেন ততক্ষণ কৃষি বিভাগ তাদের পাশে থাকবে।এবছর কৃষকরা উন্নত জাতের সরিষা বীজ বিনা-৯,বারি-১৪, বারি-১৭ সরিষা বপনের ফলে অধিক লাভবান হবে বলেও জানান তিনি।
এম এ মান্নান,
০১৭৭১৯২১৬৫২
২০/১২/২০২৩
সম্পাদক ও প্রকাশক – জাকিয়া সুলতানা
ঠিকানা – সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল পয়েন্ট, সুরভী ১২/২ হাছন নগর সুনামগঞ্জ।
মোবাইল নাম্বার ০১৩১০৮৬৮৩১৩
email- noorerfouara94@gmail.com
Design and developed by Web Nest