ভাটির বীরাঙ্গনা মনমোহিনী বিশ্বাস

প্রকাশিত: ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩

ভাটির বীরাঙ্গনা মনমোহিনী বিশ্বাস

জাকিয়া সুলতানা, সুনামগঞ্জ :

বীরাঙ্গনা মনমোহিনী বিশ্বাস সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের হাড়গ্রাম গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে আহত হন। ৮৫ বছর বয়সে এখনো বুকে গুলি বয়ে বেড়াচ্ছেন। স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও মনমোহিনী বিশ্বাস পান নি মুক্তিযোদ্ধা কিংবা বীরাঙ্গনার কোনো স্বীকৃতি।

মনমোহিনী বিশ্বাস জানান, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মুক্তিবাহিনীকে আশ্রয় দেয়া, রান্না করে খাওয়ানো এবং সহযোগিতা করার কারণে স্থানীয় রাজাকারদের রোষানলে পড়ে আমার পরিবার। একদিন ভোররাতে স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় বাড়িতে আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হত্যা করে পিতা হরকুমার বিশ্বাস ও মাতা প্রফুল্ল বিশ্বাসকে। বুকে গুলিবিদ্ধ হন মনমোহিনী নিজেও।

 

কোনো রকমে প্রতিবেশীদের সহায়তায় বেঁচে যান বীরাঙ্গনা মনমোহিনী বিশ্বাস। তবে রাজাকারদের হুমকি আর পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণে ছাড়তে হয় বাড়িঘর। এখন অন্যের বাড়িতে অনেকটাই নিঃস্ব অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছেন ৮৫ বছর বয়সী এই বীরাঙ্গনা।
মনমোহিনী বিশ্বাস আরও জানান, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবরে লিখিত আবেদন দিয়েও কোনো ফল মেলেনি।

 

ফলে মানবেতর জীবন যাপনই নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃদ্ধা মনমোহিনী বিশ্বাস অলস সময়ে ঝাপসা চোখে এখন শুধু মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রোমন্থন করেন। এখন ৮৫ বছর বয়সী বীরাঙ্গনা মনমোহিনী বিশ্বাস মৃত্যুর আগে শুধু নিজের বীরাঙ্গনা স্বীকৃতি দেখে যেতে চান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ