সুনাম হারাচ্ছে সুনামগঞ্জের এসসি বালিকা বিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১:২২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২২

সুনাম হারাচ্ছে সুনামগঞ্জের এসসি বালিকা বিদ্যালয়

ভাটির কন্ঠ ডেস্ক :: সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সরকারি এসসি (সতীশ চন্দ্র) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসিতে ভালো ফল করার দীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও এবার ১৩ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিদ্যালয়ে তাঁর উপস্থিতি নিয়মিত নয়। ক্লাসের চেয়ে কোচিংয়ে তিনি বেশি গুরুত্ব দেন। এতে বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তবে প্রধান শিক্ষক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
১৯৪০ সালে স্থাপিত এই বিদ্যালয়ে বরাবরই এসএসসিতে ফল ভালো হয়। তবে এবার ২৪০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। এ নিয়ে অনেক অভিভাবকই হতাশ।
স্কুলে এবার অনলাইনে ভর্তির আবেদনের সুযোগ না রেখে অফলাইনে বিক্রয় হয়েছে ফরম। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিপত্রে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আবেদন ফরমের মূল্য ১১০ টাকার বেশি নেওয়া যাবে না বলে উল্লেখ আছে। তবে আগ্রহীদের ৪৪০ টাকা দিয়ে ফরম নিতে হচ্ছে।
অধিদপ্তরের গত ২১ নভেম্বরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভর্তির ক্ষেত্রে আবেদন ফরম কেবল অনলাইনে যঃঃঢ়ং://মংধ.ঃবষবঃধষশ.পড়স.নফ ঠিকানায় পাওয়া যাবে। আবেদন ফির ১১০ টাকা টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে দেওয়া যাবে। পরিপত্রে উল্লেখ রয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠান বিশেষ ক্ষেত্রে স্থানীয় লটারি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী নির্বাচন করতে পারবে। তবে ফরমের মূল্য ১০০ টাকার বেশি নেওয়া যাবে না।
বিদ্যালয়ের পাশের মহল্লা হাসননগরের বাসিন্দা রাজেশ দাস ও নরেন ভট্টাচার্য বলেন, শহরের ছোট স্কুলেও অনলাইনে ভর্তির আবেদনের সুযোগ আছে। অথচ বড় স্কুলে হচ্ছে অফলাইনে আবেদন। অভিভাবকদের দাবি, অফলাইনে ভর্তি ফরম বিক্রি হচ্ছে অসৎ উদ্দেশ্যে।
শহরের বড়পাড়ার বাসিন্দা অভিভাবক সোহানুর রহমান বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি ফরম আনতে গিয়ে তাঁকে ৪৪০ টাকা দিতে হয়েছে। টাকার রসিদ দেওয়া হয়নি।
এর আগে গত এপ্রিলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সেশন চার্জ হিসেবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছিল। সমকালে এ অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৭০০ টাকা করে ফেরত দিতে বাধ্য হয়।
শহরের বাসিন্দা আইনজীবী মাহবুবুল হাসান শাহীন বলেন, জেলার নামকরা এ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক সপ্তাহে এক দিনও বিদ্যালয়ে আসেন না। তাঁর সরকারি কোয়ার্টারে অন্যরা থাকেন। তিনি আসেন কালেভদ্রে। গত তিন বছর হয় বিদ্যালয়ের ফল খারাপ হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক হাফিজ মাশহুদ চৌধুরী বলেন, এবার ফল খারাপের কারণ হচ্ছে বন্যা। ক্লাস থেকে কোচিংয়ে গুরুত্ব বেশি দেওয়ার অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, অভিভাবকদের এসব অভিযোগের যুক্তি নেই। তাঁরা ক্লাস রেখে কোচিং করান না। আর মাউশির নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁরা ভর্তি ফরমের টাকা আদায় করেন। স্কুলে না আসার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ