যারা আমাদের ভোট চোর বলে তারা তো ভোট ডাকাত: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১২:৩৩ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২৩

যারা আমাদের ভোট চোর বলে তারা তো ভোট ডাকাত: প্রধানমন্ত্রী

ভাটির কন্ঠ ডেস্ক :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা আমাদের ভোট চোর বলে তারা তো ভোট ডাকাত। কারণ তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে, অবৈধভাবে ভোট ডাকাতি করেই এসেছে।

গণভবনে আজ বুধবার (২১ জুন) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফরের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার আত্মবিশ্বাস আছে। দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছি। মানুষ পছন্দ হলে ভোট দিবে, না হলে দিবে না। আমি কী মানুষের ভোট চুরি করতে যাব?’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নির্বাচনের যখন সুনির্দিষ্ট সময় আসবে, তখন নির্বাচন হবে। একটি গণতান্ত্রিক ধারা অনেক ত্যাগ, রক্ত, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অব্যাহত রেখেছি। সবাই কী চান না গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক? গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই, দেশটি এগিয়ে গেছে। কোভিড-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক একটি চাপ পড়েছে, তখন তো সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ছিল। এরমধ্যে মরার উপরে খাড়ার ঘাঁ হলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। স্যাংশন ও কাউন্টার স্যাংশন। প্রত্যেকটি জিনিসের দাম শুধু আমার দেশে না বিশ্বব্যাপী বেড়েছে এবং মূল্যস্ফীতিও বেড়ে গেছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ ছোট্ট ভূখণ্ড কিন্তু বিশাল জনগোষ্ঠী। সবার খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা আমাদের পূরণ করতে হয়। আমাদের জনসংখ্যা যত, কিন্তু চাষাবাদের জমি সীমিত। আমরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত রেখেছি। মূল্যস্ফীতি যেভাবে বেড়েছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আমাদের হাতে যেগুলো আছে, সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কিন্তু বাইরের থেকে যা আনা হচ্ছে তার দাম বেড়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পরে, আমার ছোট ১০ বছরের ভাইকেও ছাড়েনি তারা। তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে; বঙ্গবন্ধুর কোন রক্ত যেন এদেশের ক্ষমতায় না আসতে পারে, এই জন্যে। সেখানে আমি এই দেশের ক্ষমতায় এসেছি চার চার বার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নতিও করেছি। আমি নিজে ক্ষমতা ভোগ করতে আসিনি, দেশের মানুষের উন্নতি করতে এসেছি।

তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর ইলেকশন বলে কিছু ছিল না। ভোটের অধিকার ছিল না। আমরাই আন্দোলন করে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। এখন অনেকে অনেক কথা বলতে পারে। তাদের কথা আলাদা। তারা একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের দেশের সচেতন নাগরিক তারা বিচার করবে ১৪ বা সাড়ে ১৪ বছর আগে ২০০৯ সালের আগে বাংলাদেশ কোথায় ছিল? আজ বাংলাদেশ কোথায়? মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা কি ছিল, আজ সাড়ে ১৪ বছর পর বাংলাদেশের অবস্থাটা কোথায় দাঁড়িয়ে। আমাদের সার্বিক উন্নতি হয়েছে না কি হয়নি? দেশের মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে না কি পায়নি? দেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বৃদ্ধি পেয়েছে না কি পায়নি। আপনাদের মতো সচেতন নাগরিকরা সেটা নিশ্চয়ই বিবেচনা করবেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সময় যে কয়টা উপনির্বাচন হয়েছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে, আপনারাই বলেন নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়েছে কি না। আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার লিস্ট বিএনপি সরকার করেছিল। এখন তো আর সেটা নেই, এখন ছবিসহ ভোটার তালিকা আছে। আগে লোহার বাক্স ছিল, সিল মেরে বাক্স ভর্তি করত। এখন ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বক্স, সিল মেরে বাক্স ভরার তো কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, এরপরও ইলেকশন নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, কারা তুলছে প্রশ্ন? আমার মনে হয়, এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন যারা পছন্দ করছে না, তারাই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করছে। যারা সবটুকু খাবে নিজেরা খাবে, দেশের মানুষ অবহেলায় থাকবে, দরিদ্র থাকবে, হাহাকার থাকবে– এজন্যই তো তাদের এই প্রশ্ন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ