২০ একর ভূমির বনাঞ্চল পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ

প্রকাশিত: ১:৩৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২৩

২০ একর ভূমির বনাঞ্চল পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ

ভাটির কন্ঠ ডেস্ক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা রেঞ্জে পাথারিয়া হিলস সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নির্বিচারে বনজ সম্পদ পুড়িয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে। এরই মধ্যে গত কয়েক দিনে একটি চক্র আগুন দিয়ে ১৫-২০ একর বনভূমির গাছপালা পুড়িয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও বন বিভাগের দাবি, আগুনে ৪-৫ একর বনভূমির ৫০-৬০টি গাছ, কিছু বাঁশ এবং গুল্মলতা নষ্ট হয়েছে। আগুনের কারণ অনুসন্ধানে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
১৮৫০ একরের এই সংরক্ষিত বনে হাতি, হরিণ, হনুমান, উল্লুক, চশমা বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি রয়েছে। আছে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা সেগুন, গর্জন, আওয়াল, আকাশমণিসহ নানা প্রজাতির গাছ, গুল্মলতা ও বাঁশমহাল। স্থানীয় সূত্র জানায়, ৫ মার্চ রাতে জামকান্দি এলাকার ধলছড়া ও মাকালপুঞ্জির কাছের বনে একটি চক্র শুকনো বাঁশে আগুন লাগিয়ে দেয়। এর পর দুই দিন তিন রাত আগুনে প্রচুর গাছপালা, লতাগুল্ম পুড়ে যাওয়ার পর ৮ মার্চ আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করে বন বিভাগ। এর ঠিক দু’দিন পর ১১ মার্চ রাতে আবার বনের এ এলাকায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। যাতে বেশকিছু বৃক্ষরাজি ও বাঁশমহাল পুড়ে গেছে।
অভিযোগ আছে, বন বিভাগের স্থানীয় বিট রেঞ্জ কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একরপ্রতি ৫০-৬০ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে স্থানীয় সুবিধাভোগীদের সামাজিক বনায়নের সুযোগ করে দিতে একটি চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। ওই চক্র সামাজিক বনায়নের জন্য জমি খালি করতে সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনে আগুন দিচ্ছে।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ডিএফও রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, হাতির অন্যতম খাদ্য বাঁশ। বাঁশমহাল পোড়ানোয় হাতির খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুনের তাপে বন্যপ্রাণীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বন ছেড়ে লোকালয়ে চলে যেতে পারে। এতে তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
বড়লেখার সমনবাগ রেঞ্জের কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাশ বলেন, ৭ মার্চ রাতে ধলছড়া এলাকায় আগুন লেগে ৪-৫ একর বনভূমির কিছু গাছ ও বাঁশ পুড়েছে। ৮ মার্চ বিকেলে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু ১৫-২০ একর জায়গার বনজ সম্পদ পুড়ে গেছে বলে, যে প্রচার করা হচ্ছে তা প্রপাগান্ডা ছড়ানোর শামিল। বনে যাতায়াতকারী কেউ হয়তো সিগারেট টেনে ফেলেছে, তাতেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম বলেন, পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্টের ধলছড়ায় আগুনের কারণ অনুসন্ধানে সহকারী বন কর্মকর্তা মারুফ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। ধারণা করা হচ্ছে, ১ দশমিক ৮৫ হেক্টর বনভূমিতে আগুনে ৫০-৬০টি গাছ ও বাঁশ পুড়েছে।
তদন্ত টিমের প্রধান মারুফ হোসেন বলেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বনাঞ্চল দেখে এসেছি। ক্ষয়ক্ষতির দিক বিচার-বিশ্লেষণ ও আগুনের কারণ অনুসন্ধান করে দুই-একদিনের মধ্যে প্রতিবেদন ডিএফওর কাছে পাঠিয়ে দেব।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ